শিরোনাম
গৌড়মতি নাবি জাতের নতুন আম।
বিস্তারিত
আমের গৌড়মতি নামকরণঃ
স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় নতুন জাতের এ আমের ‘গৌড়মতি’ নামকরণ করেছেন কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক। তিনি বর্তমানে রাজশাহী কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি জানিয়েছেন, আমটির সর্বপ্রথম সন্ধান পাওয়া যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তাই বাংলার প্রাচীন এই জনপদের ‘গৌড়’ থেকে ‘গৌড়’ আর মূল্য বিবেচনায় রত্নের সঙ্গে তুলনা করে ‘মতি’ শব্দের সমন্বয়ে নতুন জাতের এই আমটির ২০১৩ সালে নামকরণ করা হয়েছিল ‘গৌড়মতি’।
কৃষিবিদ আবু হানিফ মিয়া, পরিচালক,উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর সহযোগিতায় গৌড়মতি আমের উদ্ভাবনের জন্য কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেআইবি কৃষি পদক পেয়েছেন।
গৌড়মতি আমের বৈশিষ্ট্যঃ
- এই আমের টোটাল সলিউবল সুগার (টিএসএস) প্রায় ২৫ শতাংশ।
- এই আমটি নাবি জাতের। নাবি জাতের হলেও মুকুল অন্যান্য জাতের মতো একই সময়ে আসে।
- এই আমটি ল্যাংড়া বা ক্ষিরসাপাত অর্থাৎ হিমসাগরের চেয়ে ১৭- ২০ % বেশি মিষ্টি।
- গৌড়মতির ভক্ষণযোগ্য অংশ প্রায় ৯৩ ভাগ সেখানে অন্যান্য ভালো জাতের আমের ভক্ষণযোগ্য অংশ ৮০-৮২ ভাগ।
- আমটি পাকলে হলুদাভার সঙ্গে সিঁদুরে রঙের মিশ্রণে অসাধারণ দেখায়।
- গৌড়মতি আমে মিষ্টতার পাশাপাশি উচ্চমাত্রার খনিজ উপাদানও রয়েছে।
- এই আমের খোসা ও আঁটি দুটোই পাতলা এবং আঁটি ছোট হওয়ায় এ আমের ভক্ষণযোগ্য অংশ বেশি।
- ল্যাংড়া ও আশ্বিনার প্রাকৃতিক পরাগায়নের ফলে আমের নতুন এ জাতটির উদ্ভাবন হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
- এই আমটি দেখতে অনেকটা ল্যাংড়া ও আশ্বিনা জাতের আমের মতো। অর্থাৎ আশ্বিনা থেকে নাবি জাতের বৈশিষ্ট্য এবং ল্যাংড়া থেকে রং, আকৃতি ও স্বাদসহ অন্যান্য বৈশিষ্ট্য পেয়েছে এ আমটি।
- আমটি সহজে পচনশীল নয়। কেননা পাকা আম গাছ থেকে পাড়ার ৭-১০ দিন পরও আম ভালো থাকে।
- এই আম আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত পাকবে।
- প্রতিটি আমের ওজন প্রায় ৩৫০ থেকে ৬০০ গ্রাম অর্থাৎ গড়ে ৩ টি আমের ওজন ১ কেজি।
- এই আম স্বাদে, মিষ্টতায় ও গন্ধে তুলনাহীন।
- প্রতি কেজি আমের বাজার দাম কমপক্ষে ৩৫০-৪০০ টাকা।
- সাধারণত ৩ বছর বয়সের চারা গাছে ফল ধরে থাকে। ৪ বছর বয়সের প্রতিটি গাছ থেকে ১ মণ এবং ৫ বছরের প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ১.৫ মণ আম পাওয়া যায়।
- এই গাছের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো প্রতি গাছে আম ধরার পরে ঐ গাছের কাণ্ড বা গোড়া থেকে ৩ বার ফ্লাস বা নতুন পাতা বের হয়। যার ফলে প্রতি বছরই গাছে ফল ধরে। এই জাতের আম গাছের ফল ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি।
কোথায় পাবেন এ জাতের চারা/কলমঃ
এ জাতের আমের চারা/কলম(গ্রাফটিং) হর্টিকালচার সেন্টার,বারাদি,মেহেরপুর থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন । সরকারি মূল্য-৮০/- টাকা ।